স্পোর্টস ডেস্ক : মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ কি এমন বিদায় চেয়েছিলেন! বিদায়ী টি-টোয়েন্টিতে তার সতীর্থরা প্রতিপক্ষের সঙ্গে যে লড়াইটাও করতে পারলো না। ভারতের কাছে তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে ১৩৩ রানের বড় ব্যবধানে হেরেছে বাংলাদেশ।
এতে করে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে ৩-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশ হলো বাংলাদেশ। এর আগে ভারতের বিপক্ষে দুই টেস্টের সিরিজেও তারা হারে ২-০ ব্যবধানে।
বাংলাদেশের লক্ষ্য ছিল প্রায় অসম্ভব, ২৯৮ রানের। জবাবে ৭ উইকেটে ১৬৪ রানের বেশি করতে পারেনি টাইগাররা।
বিদায়ী ম্যাচে মাহমুদউল্লাহ ৯ বল খেলে এক বাউন্ডারিতে করেন মাত্র ৮ রান। এর আগে ২ ওভারে ২৬ রান দিয়ে নিয়েছিলেন একটি উইকেট।
লিটন দাস ২৫ বলে করেন ৪২ রান। তাওহিদ হৃদয় ৪২ বলে ৫ চার আর ৩ ছক্কায় অপরাজিত থাকেন ৬৩ রানে। বাকিরা কেউই সুবিধা করতে পারেননি। টপ অর্ডারের তিন ব্যাটার পারভেজ হোসেন ইমন ১ বলে ০, তানজিদ তামিম ১২ বলে ১৫ আর অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত ১১ বলে করেন মাত্র ১৪ রান।
এর আগে হায়দরাবাদের রাজিব গান্ধী ক্রিকেট স্টেডিয়ামে চার-ছক্কার বৃষ্টিতে (২২ ছক্কা, ২৫ চার) রেকর্ড সংগ্রহ গড়ে ভারত। ৬ উইকেটে ২৯৭ রান তোলে তারা। যা কিনা টেস্ট খেলুড়ে কোনো দেশের সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ।
টি-টোয়েন্টিতে আইসিসির পূর্ণ সদস্য কোনো দেশের সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহের রেকর্ডটি ছিল আফগানিস্তানের দখলে। ২০১৯ সালে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে দেহরাদুনে ৩ উইকেটে ২৭৮ করেছিল আফগানরা।
আর টি-টোয়েন্টি ইতিহাসের সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহের বিশ্বরেকর্ড নেপালের। ২০২৩ সালে হাংজুতে মঙ্গোলিয়ার বিপক্ষে ৩ উইকেটে ৩১৪ রানের সংগ্রহ গড়ে তারা।
হায়দরাবাদে মাহমুদউল্লাহর বিদায়ী টি-টোয়েন্টিতে টস হেরে ফিল্ডিং পায় বাংলাদেশ। অফস্পিনার শেখ মেহেদিকে দিয়ে বোলিং উদ্বোধন করেন নাজমুল হোসেন শান্ত। মেহেদি প্রথম ওভারে দেন ৭ রান।
তবে পরের ওভারে উদারহস্তে রান বিলিয়েছেন তাসকিন আহমেদ। তাকে টানা চারটি বাউন্ডারি হাঁকান সঞ্জু স্যামসন।
তৃতীয় ওভারে তানজিম হাসান সাকিব এসে তুলে নেন অভিষেক শর্মাকে। পুল করতে গিয়ে মিডউইকেটে শেখ মেহেদির দারুণ ক্যাচ হন ভারতীয় ওপেনার (৪ বলে ৪)।
কিন্তু এরপর সঞ্জু স্যামসন আর সূর্যকুমার যাদব চালিয়ে খেলতে থাকেন। ২২ বলে ফিফটি করেন স্যামসন। পাওয়ার প্লের ৬ ওভারেই ভারত তোলে ১ উইকেটে ৮২ রান। এরপর সূর্যকুমার ফিফটি করেন ২৩ বলে।
স্যামসন আর সূর্য টর্নেডো জুটি গড়ে বাংলাদেশকে কোণঠাসা করে দেন। এর মধ্যে রিশাদ হোসেনের জন্য এসেছে দুঃস্বপ্নের রাত। ইনিংসের দশম ওভারে তার প্রথম বলটি ডট হয়েছিল। এরপর টানা পাঁচ ছক্কা হাঁকান সঞ্জু স্যামসন।
৪০ বলে সেঞ্চুরি হাঁকান স্যামসন। শেষ পর্যন্ত তাদের ৭০ বলে ১৭৩ রানের জুটিটি ভাঙেন মোস্তাফিজুর রহমান ইনিংসের ১৪তম ওভারে।
বাউন্ডারিতে ক্যাচ দেন স্যামসন। ৪৭ বলে ১১ চার আর ৮ ছক্কায় ডানহাতি এই ব্যাটার খেলেন ১১১ রানের ইনিংস। টি-টোয়েন্টিতে এটিই তার প্রথম সেঞ্চুরি এবং ক্যারিয়ারসেরা ইনিংস।
১৪তম ওভারেই ২০০ পার করে ভারত। টি-টোয়েন্টি ইতিহাসে কোনো দলের দ্বিতীয় দ্রুততম দুইশর রেকর্ড এটি। এক নম্বরে আছে দক্ষিণ আফ্রিকা। গত বছর সেঞ্চুরিয়ানে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ১৩.৫ ওভারে দুইশ তুলেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা।
পরের ওভারে মাহমুদউল্লাহ ফেরান সূর্যকে। ৩৫ বলে ৭৫ রানের ইনিংসে ৭টি বাউন্ডারি আর ৫টি ছক্কা হাঁকান ভারতীয় অধিনায়ক।
শেষদিকে রিয়ান পরাগ ১৩ বলে ৩৪ আর হার্দিক পান্ডিয়া ১৮ বলে ৪৭ রানের ইনিংস খেলে দিয়ে যান।
বাংলাদেশের পক্ষে এই ম্যাচে সবচেয়ে বেশি উইকেট শিকার করেন তানজিম হাসান সাকিব। ৩ উইকেট পান ৬৬ রান খরচায়।