বরিশাল প্রতিনিধি : ঘূর্ণিঝড় ‘মিধিলি’র প্রভাবে বরিশালসহ গোটা দক্ষিণাঞ্চলে বৈরী আবহাওয়া বিরাজ করছে। এ ছাড়া দমকা হাওয়ার সঙ্গে কখনও ভারী কখনও মাঝারি ধরনের বৃষ্টি হচ্ছে।
এতে বরিশাল নগরের নিম্নাঞ্চল পানিতে তলিয়ে গেছে। দিনটি শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) হওয়ায় অফিস-আদালত বন্ধ রয়েছে। তবে মুষলধারে বৃষ্টির কারণে প্রয়োজন ছাড়া তেমন কেউ বাইরে বের হচ্ছেন না।
এদিকে বরিশালের অভ্যন্তরীণ রুটে লঞ্চ চলাচল থাকলেও মানুষ কম থাকায় সড়কে ব্যক্তিগত ও গণপরিবহনের সংখ্যা খুবই কম।
এদিন বিকেলে আবহাওয়া অফিসের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) দুপুর থেকে শুক্রবার বিকেল ৩টা পর্যন্ত ২১৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। আর এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ বাতাসের গতিবেগ ছিল ৫৫ কিলোমিটার।
এদিকে রাতে বর্ষণের পরিমাণ আরও বাড়বে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়া অফিসের সিনিয়র পর্যবেক্ষক আব্দুল কুদ্দুস। তিনি বলেন, বৃষ্টির সঙ্গে সঙ্গে বাতাসের গতিবেগও বাড়ছে।
অপরদিকে বরিশাল নদী বন্দরে ৩ নম্বর ও পায়রা সমুদ্র বন্দরে ৭ নম্বর সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
বরিশাল নদী বন্দর কর্মকর্তা বিআইডব্লিউটিএ’র যুগ্ম পরিচালক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, অভ্যন্তরীণ সব রুটের লঞ্চ চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। নৌযানের নিরাপত্তায় সবাইকে নিরাপদে নোঙর করতে বলা হয়েছে। স্পিডবোট, ট্রলার সকাল থেকেই বন্ধ রয়েছে।
এদিকে বৃষ্টিতে যাত্রীর সংখ্যা একেবারেই কম বিধায় বাস চলাচলও কম রয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কিশোর কুমার দে।
অপরদিকে বরিশাল নগরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ঘুরে দেখা গেছে, ভারী বর্ষণে অধিকাংশ সড়ক পানির নিচে তলিয়ে গেছে। বরিশাল নগরের বটতলা এলাকা ঘুরে দেখা যায়, এখানে চলাচলের প্রধান সড়কটিতে হাঁটু পানি জমেছে। ফলে বিপাকে পড়েছেন এ এলাকার বাসিন্দারা। একই অবস্থা নগরের অক্সফোর্ড মিলন রোড, গোরস্তান রোড, ভাটিখানা ও সদর রোড এলাকা।
এসব এলাকার বাসিন্দারা জানান, গত ১০ বছরে জলাবদ্ধতার সমস্যা সমাধান হয়নি। একটু বৃষ্টি হলেই হাঁটুপানি জমে। প্রতিনিয়ত জনপ্রতিনিধিরা আশা দিয়ে থাকলেও এর কোনো সমাধান করেনি। তবে নতুন মেয়র নির্বাচনের আগে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যে জলাবদ্ধতা নিরসন করবেন। সে অনুযায়ী ৮০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এবারও যদি আমাদের ভাগ্যের পরিবর্তন না হয় তাহলে দুঃখের শেষ থাকবে না।
শাওন নামে এক রিকশাচালক বলেন, সকালে বৃষ্টি কিছুটা কম ছিল। তখন দুয়েকজন যাত্রী পেয়েছি। কিন্তু দুপুরের পর এতো বেশি বৃষ্টি শুরু হয়েছে রাস্তায় একজন লোকও পাচ্ছি না। শহরের বেশিরভাগ রাস্তা তলিয়ে গেছে। অনেক রাস্তায় হাঁটুর বেশি পানি জমেছে।
মিলন নামে এক শ্রমিক বলেন, প্রচণ্ড বৃষ্টিতে আজ রোজগার করতে পারিনি। বিকেলে বৃষ্টি কমলে চেষ্টা করবো।
সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতা কর্মকর্তা রেজাউল করিম বলেন, বৃষ্টির পানি যেন আটকে না থাকে এজন্য ওয়ার্ডভিত্তিক পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা কাজ করছেন। দ্রুত পানি অপসারণে তারা ড্রেন পরিষ্কার করছেন। কোথাও প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হলে তা সরিয়ে দিচ্ছেন। ড্রেনে থাকা পলিথিনগুলো তুলে ফেলা হচ্ছে।