বগুড়া প্রতিনিধি: ধর্ষকের দেওয়া আগুনে হাসপাতালে ৪০ দিন মৃত্যুযন্ত্রণায় কাতরিয়ে মারা গেছেন বগুড়ার মাদ্রাসাশিক্ষার্থী মারুফা। মঙ্গলবার রাত ৮টায় রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে মারা যান তিনি। এর আগে, গত ৮ সেপ্টেম্বর ধর্ষণের সময় অচেতন হয়ে গেলে মারুফার শরীরে চটের বস্তা ও কাপড় দিয়ে তেল ঢেলে আগুন দেয় অভিযুক্ত ধর্ষক সাইফুল।
নিহত মারুফা উপজেলার আটমূল ইউনিয়নের নান্দুড়া গ্রামের মাসুদুর রহমানের মেয়ে এবং স্থানীয় মাদ্রাসার আলিম শ্রেণির শিক্ষার্থী।
মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে মারুফার চাচা কামরুজ্জামান বলেন, ঘটনার পর থেকেই সে খুব কষ্ট পাচ্ছিলো। হাসপাতালে তার চিকিৎসা করা হচ্ছিলো। মৃত্যুর আগে মারুফার শরীর অনেক খারাপ হয়ে যায়। একসময় সে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। পরে হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক মারুফা মারা গেছে বলে জানান।
শিবগঞ্জ থানার ওসি আব্দুর রউফ বলেন, বিষয়টি জানার পর আমরা ওই দিনই মূল অভিযুক্ত সাইফুল ইসলামকে আটক করি। পরে রাতে মারুফার বাবা সাইফুলসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা করেন। পরদিন ৯ সেপ্টেম্বর সাইফুলকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
এটা সংঘবদ্ধ ধর্ষণ ছিল কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, না, বাদী বলেছে একজন ধর্ষণ করেছে আর বাকি দুজন বাড়ির বাইরে দাঁড়ানো ছিল। ওই দুই জন পলাতক রয়েছে। লাশ বগুড়ায় আনার পর ময়না তদন্ত করা হবে।
উল্লেখ্য, ৮ সেপ্টেম্বর জুমার নামাজের সময় বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে মারুফাকে সাইফুল ধর্ষণ করে। এসময় মারুফা জ্ঞান হারিয়ে ফেললে বাড়িতে থাকা চটের বস্তা এবং কাপড়চোপড় তার শরীরের ওপর দিয়ে তাতে সয়াবিন তেল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দিয়ে পালিয়ে যান সাইফুল। এক পর্যায়ে মারুফার জ্ঞান ফিরলে সে দৌড়ে পাশের বাড়িতে গিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে তাকে ভর্তি করা হয়।