নিজেস্ব প্রতিবেদক : ডিজিটাল ব্যাংকের অনুমোদন পেল নগদসহ ৮ প্রতিষ্ঠান ডিজিটাল ব্যাংকের নীতিগত অনুমোদন পেয়েছে নগদসহ আট প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে রোববার (২২ অক্টোবর) পাঁচটি প্রতিষ্ঠানকে লেটার অব ইনটেন্ট (এলওআই) বা সম্মতিপত্র দেওয়া হয়েছে। অপর তিনটিকে এলওআই দেওয়া হবে ছয় মাস পর। নীতিগত অনুমোদন পাওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে তিনটি বর্তমানে ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করছে। অপর পাঁচটি ব্যাংকিং কার্যক্রমের সঙ্গে বর্তমানে সম্পৃক্ততা নেই। এই ব্যাংকের লাইসেন্স পেতে ৫২টি প্রতিষ্ঠান আবেদন করেছিল।
রোববার (২২ অক্টোবর) বাংলাদেশ ব্যাংকের বোর্ড মিটিংয়ে আট প্রতিষ্ঠানকে নীতিগত অনুমোদন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
যে আট প্রতিষ্ঠানকে ডিজিটাল ব্যাংকের নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে, সেগুলো হলো: বিকাশ ডিজিটাল ব্যাংক, ১০টি ব্যাংক মিলিয়ে ডিজি-টেন ব্যাংক এবং ব্যাংক এশিয়ার ডিজিটাল ব্যাংক। এসব প্রতিষ্ঠান বর্তমানে ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনার সঙ্গে সম্পৃক্ত। এছাড়া, নগদ ডিজিটাল ব্যাংক, কড়ি ডিজিটাল ব্যাংক, স্মার্ট ডিজিটাল ব্যাংক, জাপান-বাংলা ডিজিটাল ব্যাংক এবং নর্থ-ইস্ট ডিজিটাল ব্যাংক। এসব প্রতিষ্ঠান বর্তমানে ব্যাংকিং কার্যক্রমের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়।
নীতিগত অনুমোদন পাওয়া ডিজি-টেন ব্যাংকের যে ১০টি ব্যাংক অন্তর্ভুক্ত, সেগুলো হলো: সিটি ব্যাংক, ইস্টার্ন ব্যাংক, মার্কেন্টাইল ব্যাংক, মিডল্যান্ড ব্যাংক, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, এনসিসি ব্যাংক, প্রাইম ব্যাংক, পূবালী ব্যাংক, ট্রাস্ট ব্যাংক এবং ডাচ-বাংলা ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মেজবাউল হক বলেছেন, বোর্ড সভায় আটটি প্রতিষ্ঠানকে ডিজিটাল ব্যাংকের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য নীতিগত অনুমতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। বর্তমানে ব্যাংকিং কার্যক্রমের সঙ্গে সম্পৃক্ত এমন তিন প্রতিষ্ঠানকে নীতিমালা দেওয়া হবে। আর যেসব প্রতিষ্ঠান ব্যাংকিং কার্যক্রমের সম্পৃক্ততা নেই, সেগুলোর মধ্যে দুটিকে লেটার অব ইনটেন্ট বা সম্মতিপত্র (এলওআই) দেওয়া হয়েছে। তারা ছয় মাসের মধ্যে ব্যাংকিং কার্যক্রম সম্পন্ন করবে। তাদের পারফরম্যান্স দেখে ছয় মাস পর আরও তিনটি বিষয় বিবেচনা করা হবে। অনেক কমপ্লায়েন্স আছে, সেগুলো পরিপালন করার পর ছয় মাস পর অপারেশনের অনুমোদন পাবেন তারা।
তিনি বলেন, ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করা তিনটি প্রতিষ্ঠান শুধু ডিজিটাল ব্যাংকিং উইং খুলে কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবে।
ডিজিটাল ব্যাংক পরিচালনার জন্য শুধু প্রধান কার্যালয় থাকবে। সেবা প্রদানে এই ব্যাংকের আর কোনো স্থাপনা, ওভার দ্য কাউন্টার (ওটিসি), শাখা, উপশাখা, এটিএম, সিডিএম অথবা সিআরএম বুথ ছাড়াই পুরোপুরি প্রযুক্তিনির্ভরভাবে চলবে ‘ডিজিটাল ব্যাংক’। থাকবে না সশরীরে লেনদেনের কোনো ব্যবস্থা। মোবাইল অ্যাপনির্ভর আর ডিজিটাল যন্ত্র ব্যবহার করে গ্রাহকদের দেওয়া হবে ব্যাংকিং সেবা। সেবা মিলবে ২৪ ঘণ্টা। ডিজিটাল ব্যাংক ভার্চুয়াল কার্ড, কিউআর কোড ও অন্য কোনো উন্নত প্রযুক্তিভিত্তিক পণ্য চালু করতে পারবে। কোনো প্লাস্টিক কার্ড দিতে পারবে না। এ ব্যাংকের গ্রাহকরা অবশ্য অন্য ব্যাংকের এটিএম, এজেন্টসহ নানা সেবা ব্যবহার করতে পারবেন। এটি ঋণপত্রও (এলসি) খুলতে পারবে না। শুধু ছোট ঋণ দেবে, বড় ও মাঝারি শিল্পে ঋণ দেওয়া যাবে না। তবে, আমানত নিতে কোনো বাধা নেই।
নতুন ব্যাংকিং ব্যবস্থা ডিজিটাল ব্যাংকের জন্য প্রয়োজনীয় ন্যূনতম মূলধন ১২৫ কোটি টাকা নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। অন্যদিকে, প্রথাগত ব্যাংকের লাইসেন্স পেতে ন্যূনতম মূলধন লাগে ৫০০ কোটি টাকা।
ডিজিটাল ব্যাংকের গাইডলাইনে বলা হয়েছে, ডিজিটাল ব্যাংকে প্রত্যেক স্পন্সরের সর্বনিম্ন শেয়ারহোল্ডিং হবে ৫০ লাখ টাকা (সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ বা ১২.৫ কোটি টাকা)। ডিজিটাল ব্যাংক পরিচালিত হবে ব্যাংক কোম্পানি আইনের আওতায় বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রণীত গাইডলাইন বা নির্দেশিকা অনুসারে।