বিশেষ প্রতিনিধি: স্বপ্নের পদ্মা সেতুতে রেলসংযোগ প্রকল্পের ঢাকা-ভাঙ্গা অংশের উদ্বোধনের পর ট্রেনে চেপে মুন্সিগঞ্জের মাওয়া স্টেশন থেকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা স্টেশন যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এ ট্রেন যাত্রায় বঙ্গবন্ধুকন্যা সফর সঙ্গী হিসেবে নিয়েছেন রিকশাচালক, দিনমজুর থেকে শুরু করে মসজিদের ইমাম, রাজনৈতিক নেতা-মন্ত্রীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।
ছোট বোন শেখ রেহানা, মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, রাজনৈতিক নেতা, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বাইরে আরও ৫০ জনকে সফর সঙ্গী হিসেবে নেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রীর ৫০ জন সফর সঙ্গীর মধ্যে রয়েছেন- বীর মুক্তিযোদ্ধা ৪ জন, প্রাথমিক ছাত্র-ছাত্রী ৪ জন, প্রাথমিক শিক্ষক ১ জন, মাদরাসা ছাত্রছাত্রী ৩ জন, ইমাম ১ জন, মাদরাসাশিক্ষক ১ জন, ক্ষুদ্র নৃ-তাত্ত্বিক জনগোষ্ঠী ২ জন, হিন্দু ধর্মাবলম্বী ১ জন, বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী ১ জন, খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী ১ জন, রিকশাচালক ১ জন, কৃষক ১ জন, নারী কৃষক ১ জন, গার্মেন্টসকর্মী ১ জন, ফেরিচালক ১ জন, মাঝি ১ জন, মেট্রোরেল কন্ট্রোলার ১ জন, টিটিই ১ জন, ট্রেনচালক ১ জন, স্টেশন মাস্টার ১ জন, ওয়েম্যান ১ জন, বাসচালক ১ জন, হকার ১ জন, সবজি বিক্রেতা ১ জন, পাটকল শ্রমিক ১ জন, নার্স ১ জন, দিনমজুর ১ জন, জেলা আনসার ও ভিডিপি ১ জন, ভিডিপি ১ জন, পুলিশ ১ জন, ফায়ার সার্ভিস ১ জন, স্কাউট ১ জন, বিএনসিসি ১ জন, র্যাব ১ জন, রেল পুলিশ ১ জন, সেনাবাহিনীর ১ জন, নৌবাহিনীর ১ জন, বিমান বাহিনীর ১ জন, বিজিবির ১ জন, কোস্টগার্ডের ১ জন ও আরএনবির ১ জন সদস্য।
মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর) দুপুর ১২টা ৫২ মিনিটে ট্রেনের টিকিট কাটেন প্রধানমন্ত্রী। এর আগে ১২টা ৫৪ মিনিটে সবুজ পতাকা নেড়ে এ ট্রেন সার্ভিসের উদ্বোধন করেন তিনি।
এরপর তিনি ট্রেনে ওঠেন। দুপুর ১২টা ৫৯ মিনিটে ট্রেনটি মাওয়া স্টেশন থেকে ফরিদপুরের উদ্দেশে রওনা হয়।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী মাওয়া স্টেশনের পাশে পদ্মা সেতু রেলসংযোগ প্রকল্পের ঢাকা-ভাঙ্গা অংশের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন।
বিকেলে ভাঙ্গার ডা. কাজী আবু ইউসুফ স্টেডিয়ামে ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় অংশগ্রহণ করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
জনসভায় যোগদান শেষে প্রধানমন্ত্রী ফরিদপুর থেকে গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়ায় যাবেন।
সেখানে বঙ্গবন্ধুর মাজার প্রাঙ্গণে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ, ফাতেহা পাঠ ও মোনাজাতে অংশ নেবেন শেখ হাসিনা।
টুঙ্গিপাড়ায় নিজ বাড়িতে রাত্রিযাপন করবেন তিনি।
আগামী বুধবার (১১ অক্টোবর) গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়া থেকে সড়ক পথে ঢাকায় ফিরবেন প্রধানমন্ত্রী।
ঢাকা-ভাঙ্গা অংশ ৮২ কিলোমিটার চালু হলেও যশোর পর্যন্ত সম্পূর্ণ পথ চালু হবে ২০২৪ সালের ৩০ জুন। ঢাকা থেকে যশোর পর্যন্ত মোট রেলপথ ১৬৯ কিলোমিটার।
রেল কর্মকর্তারা বলছেন, শুরুতে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে তিনটি স্টেশন- মাওয়া, পদ্মা (জাজিরা) ও শিবচরে ট্রেন থামার ব্যবস্থা থাকছে।
১৫ সেপ্টেম্বর পরীক্ষামূলক ট্রেন পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে ট্রেন চালানো হয়। পরের দিন চালানো হয় মালবাহী ট্রেন। এরই মধ্যে ১২০ কিলোমিটার গতিতেও এ রুটে ট্রেন চালানো হয়েছে, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে ট্রেনের সর্বোচ্চ গতি।
পদ্মা সেতুর হয়ে ঢাকা-যশোর রেলপথ নির্মাণের মাধ্যমে ঢাকার সঙ্গে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার সরাসরি যুক্ত হবে। এ রেলপথের মাধ্যমে নতুন চারটি জেলা মুন্সীগঞ্জ, শরীয়তপুর, মাদারীপুর ও নড়াইল রেলসংযোগ স্থাপিত হবে।
একইসঙ্গে আন্তঃদেশীয় রেল যোগাযোগে ঘটবে বিপ্লব। ঢাকা থেকে সরাসরি কলকাতা যোগাযোগ নিশ্চিত হবে। আর আখাউড়া আগরতলা রেলপথের মাধ্যমে ভারতের দুই নগরী কলকাতা ও আগরতলার দূরত্ব কমে আসবে মাত্র ৫৫০ কিলোমিটারে।