ডেস্ক নিউজ: রাজধানীর খিলগাঁও বাজার রেলগেট এলাকার তিনটি মার্কেট উচ্ছেদ বন্ধের দাবি জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। তাদের দাবি, উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞা সত্বেও সিটি কর্পোরেশন অবৈধভাবে উচ্ছেদের প্রস্তুতি নিচ্ছে। মার্কেট উচ্ছেদ না করে আইনিভাবে এ সমস্যা সমাধানের জন্য প্রধানমন্ত্রী ও মেয়রের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ব্যবসায়ীরা। মার্কেট তিনটি হলো—খিলগাঁও সিটি কর্পোরেশন কাচাবাজর, পূবালী শপিং সেন্টার এবং উত্তরা মার্কেট।
শনিবার (২১ অক্টোবর) বিকেলে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন তারা।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন—খিলগাঁও সিটি কর্পোরেশন কাঁচাবাজার মালিক সমিতির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আব্দুল লতিফ, পূবালী শপিং সেন্টারের ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো. আব্দুল কুদ্দুস ও সাধারণ সম্পাদক মো. খলিলুর রহমান বাচ্চু মুন্সী এবং উত্তরা মার্কেটের ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি নাসির উদ্দিন বাবুল ও সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল টিপু।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, খিলগাঁও রেলগেটের পাশে সিটি কর্পোরেশনের বাজারের ভেতরের অংশে দুটি ব্যক্তি মালিকানাধীন মার্কেট আছে। এর একটির নাম পূবালী শপিং সেন্টার। এটি সাড়ে ৩৪ শতাংশ জমিতে ১৭৬টি দোকান নিয়ে ১৯৬৮ সালে প্রতিষ্ঠিত। দ্বিতীয়টি উত্তরা মার্কেট, যা সাড়ে ১৬ শতাংশ জমিতে ৬৪ দোকান নিয়ে প্রতিষ্ঠিত। দুটি মার্কেটে আলাদা আলাদা কমিটি ও ব্যবসায়ী সমিতি আছে। এই দুটি মার্কেটে অসংখ্য ব্যবসায়ী ও বিক্রয়কর্মী দীর্ঘ ৫৫ বছর ধরে ব্যবসা করে জীবিকা নির্বাহ করছেন। কিন্তু, দুঃখের বিষয় এই যে, সম্প্রতিক কয়েকজন অসাধু ব্যক্তি অতি গোপনে তাদের হীন স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য মার্কেট দুটি অবৈধ মর্মে সিটি কর্পোরেশনকে বোঝাতে চেষ্টা করে। একপর্যায়ে তারা একটি বহুতল আধুনিক মার্কেট নির্মাণে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের কাছে আগ্রহ প্রকাশ করে।
গোপন সূত্রে উত্তরা ও পূবালী মার্কেটের ব্যবসায়ীরা এ বিষয়টি জানতে পেরে সিটি কর্পোরেশনের ভূ-সম্পত্তি বিভাগের কর্মকর্তার মাধ্যমে ব্যক্তি মালিকানা সম্পত্তির সকল কাগজপত্র মেয়রকে দাখিল করেন। কিন্তু, কোনো আলোচনা ছাড়াই গত ১৬ আগস্ট খিলগাঁও সিটি কর্পোরেশন মার্কেট এবং পাশে থাকা ব্যক্তি মালিকানা দুটি মার্কেট উচ্ছেদ করতে পত্রিকায় নিলাম বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়, যা পূবালী ও উত্তরা মার্কেটের মালিক ও ব্যবসায়ীরা দেখতে পান। ১৯৮৪ সাল থেকে সরকারি নিয়ম মেনে খাজনা পরিশোধ করে আসছেন মার্কেটের দোকানের মালিকরা।
এদিকে, ২০১৮ সালে সিটি কর্পোরেশন বেআইনিভাবে শপিং সেন্টারের মাটি পরীক্ষা করলে পূবালী শপিং সেন্টারের মালিকরা উচ্চ আদালতে একটি রিট দায়ের করেন। উচ্চ আদালত বিভিন্ন কাগজপত্র ও তথ্য যাচাই-বাছাই করে পূবালী শপিং সেন্টার এবং উত্তরা মার্কেট উচ্ছেদের ক্ষেত্রে স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করেন।
সম্প্রতি আদালতের আদেশ উপেক্ষা করে মার্কেট ভাঙতে সিটি কর্পোরেশনের মার্কেট সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোকসেদ আলি সরদারের মাধ্যমে মাইকিং করে জানানো হয়, এই ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দুটি ভেঙে খালি করে দেওয়া হবে। দোকানের মালপত্র সরিয়ে নিতে বলা হয়। এই মার্কেট উচ্ছেদের জন্য যেহেতু আদালতের নিষেধাজ্ঞা আছে, তাই আইনিভাবে এই সমস্যার সমাধানের জন্য প্রধানমন্ত্রী ও মেয়রের কাছে আবেদন জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।