নিজেস্ব প্রতিবেদক : বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার অসুস্থতাকে তার দলের নেতারা ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছেন বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেছেন, খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে নিজেরা আইনগতভাবে না পেরে জাতিসংঘের হস্তক্ষেপ চায় বিএনপি। খালেদা জিয়ার মুক্তি আইনের ব্যাপার। শনিবার (৬ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর বেইলি রোডে ‘শেখ হাসিনা পার্বত্য চট্টগ্রাম ঐতিহ্য সংরক্ষণ ও গবেষণা কেন্দ্রে’ পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে সাত দিনব্যাপী পাহাড়ি ফলমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন ওবায়দুল কাদের।
কোটা আন্দোলন নিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, সরকার তো কোটা রাখেনি। এটা নিয়ে আদালতে মামলা চলছে। ভারত ও চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক বিষয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশের রাজনৈতিক বন্ধু ভারত ও উন্নয়নের বন্ধু চীন। উন্নয়নের জন্য যেখানে সুযোগ-সুবিধা পাবো, তা কেন নেব না?
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক ভালো বলেই অনেক সুবিধা নিতে পেরেছি। ভারত বাংলাদেশের রাজনৈতিক বন্ধু আর চীন উন্নয়নের বন্ধু। এই দেশে বহু উন্নয়নে চীনের অবদান আছে।’
তিনি বলেন, ভারতের সঙ্গে ২১ বছর বৈরী সম্পর্ক রেখে কী অর্জন করেছে পঁচাত্তর-পরবর্তী রাজনৈতিক দলগুলো? শেখ হাসিনা এবং নরেন্দ্র মোদির সম্পর্ক ভালো ছিল বলেই আমরা বাংলাদেশের সমান আরেকটি সমুদ্র পেয়েছি। সম্পর্ক ভালো ছিল বলেই ছিটমহল সমস্যার সমাধান করেছি।
সম্পর্ক ভালো থাকলে আলাপ-আলোচনা করে সমস্যার সমাধান করা যায়, উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, গঙ্গা চুক্তিসহ বহু সুবিধা ভারত থেকে নিতে পেরেছেন শেখ হাসিনা। যারা বড় বড় কথা বলেন, তারা গঙ্গার কথা ভুলে গিয়েছিলেন। খালি হাতে আগেও ফিরি নাই, এখনো ফিরি নাই।
চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের পার্টনারশিপ রয়েছে, জানিয়ে সেতুমন্ত্রী বলেন, সাহায্য পেলে আমরা কেন নেব না? আমার দেশের উন্নয়নের জন্য যেখান থেকে সাহায্য দরকার আমরা সেখান থেকে সাহায্য নেব। মেট্রোরেল, পদ্মা সেতু, এক্সপ্রেসওয়ে এসব নিয়ে অনেকের জ্বলে, যাদের জ্বলে, তাদের মন্তব্যের কোনো জবাব আমরা দেবো না।
তিনি বলেন, গত ১৬ বছরে বাংলাদেশ বদলে গেছে। সেই বদলের সঙ্গে তাল মিলিয়ে পার্বত্য অঞ্চলও বদলেছে। সড়ক যোগাযোগে এখন পার্বত্য তিন জেলা অনেক উন্নত, একসাথে ৪২টি ব্রিজ উদ্বোধন হয়েছে খাগড়াছড়িতে। এখন সীমান্ত সড়ক তৈরি হচ্ছে। শেখ হাসিনা থাকলে সব সমস্যার সমাধান হবে।
সড়ক পরিবহনমন্ত্রী বলেন, বিদেশি বহু ফলের চেয়ে অনেক উন্নত মানের ফল উৎপাদিত হয় পার্বত্য তিন জেলায়। একসময় আনারসই প্রধান ফল ছিল। কিন্তু, এখন বহু ধরনের ফল উৎপাদিত হয়। একসময় যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত না থাকার কারণে ফল পচে যেত। আজকে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের কারণে আপনাদের পাহাড়ের সুমিষ্ট ফল ঢাকায় চলে আসে। সিঙ্গাপুরের চেয়ে উন্নতমানের ফল আমাদের পাহাড়ি অঞ্চলে উৎপাদিত হয়।
এই পাহাড়ি ফলমেলা আগামী ১২ জুলাই (শুক্রবার) পর্যন্ত চলবে। প্রতিদিন সকাল সাড়ে ১০ থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে এ মেলা।
পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন—সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী নাহিদ ইজাহার খান; বন, জলবায়ু ও পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি দীপংকর তালুকদার, পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি, জ্বরতী তঞ্চঙ্গা এমপি, পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব এ কে এম শামিমুল হক ছিদ্দিকী প্রমুখ।