ক্রীড়া প্রতিবেদক: স্কোর লেভেল! শাহিন শাহ আফ্রিদি ফুল টস ছুঁড়লেন। স্ট্রাইকে থাকা হাশমতুল্লাহ শাহীদি হাতছাড়া করলেন না। ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার লেগ দিয়ে পাঠিয়ে দিলেন বাউন্ডারির বাইরে। সঙ্গে সঙ্গে শুরু হলো গর্জন। প্রথমবারের মতো পাকিস্তানকে ওয়ানডেতে স্রেফ উড়িয়ে দিলো আফগানিস্তান। তাও আবার বিশ্বকাপ মহারণে। এই গর্জনতো তাদেরই মানায়।
দিল্লিতে প্রথমে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড। এবার চেন্নাইয়ে আফগানিস্তানের শিকার হলো বিশ্বকাপের অন্যতম ফেভারিট পাকিস্তান। ব্যাটে-বলে দারুণ নৈপূণ্য দেখিয়ে কর্তৃত্বের সঙ্গে বাবর আজমের দলকে নিয়ে যেন আফগানরা ছেলেখেলা করলো।
চিপকে সোমবার (২৩ অক্টোবর) টস জিতে ব্যাটিং করতে নেমে ৭ উইকেটে ২৮২ রান করে পাকিস্তান। তাড়া করতে নেমে ৬ বল হাতে রেখে মাত্র ২ উইকেট হারিয়ে লক্ষ্য পৌঁছে যায় আফগানিস্তান। ওয়ানডে ইতিহাসে এর আগে এত রান তাড়া করে কখনো জেতেনি আফগানরা!
বিশ্বকাপে প্রথমবারের মতো দুটি ম্যাচে জয়ের কৃতিত্ব অর্জন করে রশিদ খানরা। অস্ট্রেলিয়া-ভারতের পর টানা তৃতীয় ম্যাচে হারলো বাবরের দল। পাঁচ ম্যাচে পাকিস্তানের জয় মাত্র দুটি, অন্যদিকে সমান ম্যাচ খেলে আফগানদের জয়ও দুটি।
রান তাড়া করতে নেমে যেটা প্রয়োজন ছিল আফগানরা সেটাই করেছে। শুরুতেই রহমানুল্লাহ গুরবাজ-ইবরাহীম জাদরানের দুর্দান্ত এক জুটি। একপ্রান্তে গুরবাজের ঝড়ে এলোমেলো পাকিস্তানি বোলিং অন্য প্রান্তে ইবরাহীম জাদরান দিয়ে যাচ্ছিলেন দারুণ সঙ্গ।
দুজনের জুটি থেকে আসে ১২১ রান। গুরবাজ মাত্র ৫৩ বলে ৬৫ রানে আউট হলে ভাঙে ১২১ রানের জুটি। ইবরাহীম তখনও অবিচল। খেলছিলেন দেখেশুনে সাবধানে। গুরবাজের পর তার সঙ্গী হন রহমত শাহ। যখন সেঞ্চুরি থেকে মাত্র ১৩ রান দূরে, তখন ইবরাহীম আউট হয়ে ফেরেন। তার ব্যাট থেকে ১১৩ বলে সর্বোচ্চ ৮৭ রান আসে। তার হাতে ওঠে ম্যাচসেরার পুরস্কারও।
ইবরাহীম আউট হলেও আফগানদের সমস্যা হয়নি। নতুন ব্যাটার শাহীদিকে সঙ্গে নিয়ে ম্যাচ শেষ করে আসেন রহমত। ৭৭ রানে রহমত ও ৪৮ রানে অপরাজিত ছিলেন শাহীদি। পাকিস্তানের হয়ে ১টি করে উইকেট নেন শাহীন ও হাসান আলী।
এর আগে ব্যাট করতে নেমে উদ্বোধনী জুটিতে ৫৬ রান তোলেন আব্দুল্লাহ শফিক ও ইমাম-উল-হক। ইমাম ২ চারে ১৭ রান করে আউট হলেও শফিক তুলে নেন ফিফটি। দলীয় ১১০ রানের মাথায় ৫ চার ও ২ ছক্কায় ৫৮ রান করে আউট হন তিনি।
অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ রিজওয়ান অবশ্য আজ সুবিধা করতে পারেননি। ১২০ রানের মাথায় তিনি ফেরেন ব্যক্তিগত ৮ রানে। ১৬৩ রানের মাথায় সৌদ শাকিল ফেরেন ৩ চারে ২৫ রান করে।
তবে রান খরায় থাকা বাবর আজম আজ সবচেয়ে ভালো করেন। তিনি ৯২ বলে ৪টি চার ও ১ ছক্কায় সর্বোচ্চ ৭৪ রান করে আউট হন দলীয় ২০৬ রানের মাথায়। সেখান থেকে ইফতিখার আহমেদ ও শাদাব খানের ঝড়ো ইনিংসে পাকিস্তান ৭ উইকেটে ২৮২ রানের সংগ্রহ পায়। ইফতিখার মাত্র ২৭ বলে ২ চার ও ৪ ছক্কায় ৪০ রান করেন। আর শাদাব ১ চার ও ১ ছক্কায় করেন ৪০ রান।
বল হাতে আফগানিস্তানের নূর আহমদ ১০ ওভারে ৪৯ রান দিয়ে ৩টি উইকেট নেন। আর নাভিন-উল-হক ৭ ওভারে ৫২ রান দিয়ে নেন ২ উইকেট।